রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১২ অপরাহ্ন
অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল।প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত রয়েছেন অনিক রায় (যুগ্ম আহ্বায়ক), খালেদ সাইফুল্লাহ (যুগ্ম আহ্বায়ক), মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন (যুগ্ম আহ্বায়ক) ও তাজনূভা জাবীন (যুগ্ম আহ্বায়ক)।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইন সংস্কার, নতুন দল নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো এবং মৌলিক সংস্কারের আলোকে ইসি পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২০ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির দপ্তরে বেলা ১২টায় বৈঠকটি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন।
আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী, আজ রোববারই (২০ এপ্রিল) শেষ হচ্ছে এবারের দল নিবন্ধন আবেদনের সময়। এ অবস্থায় নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছে এনসিপি।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় অনুযায়ী, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের এক মাসের মাথায় বিদায় নেন তৎকালীন ইসি। বিদ্যমান আইনের আলোকে এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন গঠিত হয় ২১ নভেম্বর। বর্তমান ইসির অধীনে ত্রয়োদশ সংসদে নির্বাচন হবে, এ বছরের ডিসেম্বরে ভোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছেন তারা। এরইমধ্যে দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া চলার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে ইসি পুনর্গঠনের দাবিও এসেছে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি থেকে।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া চিঠিতে এনসিপি বলেছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনসহ সুপারিশ দিলেও অদ্যাবধি মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। মৌলিক সংস্কার ও বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী না করেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গত ১০ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংস্কারের পূর্বেই দ্রুত তড়িৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তগুলো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত।
জেলা পর্যায় ১০ শতাংশ ও উপজেলা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাবের কথাও তুলে ধরে এনসিপি বলেছে, বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধনপূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।
একইসঙ্গে মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমতাবস্থায় অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিন বর্ধিত করার অনুরোধ করা হলো।
গত ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। তথ্য উপদেষ্টার পদ ছেড়ে আসা নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করে দলটি। আত্মপ্রকাশের পর নিবন্ধনের প্রস্তুতির মধ্যে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসল দলটি।